1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
July 27, 2024, 12:44 am

মাঝি মাল্লাদের হেঁইও রে হেঁইও ধ্বনিতে মুখরিত ইছামতির পাড়

তানজিম ইসলাম ও শামীম হোসেন সামন:
  • Update Time : Saturday, September 10, 2022
  • 873 Time View

ঢাকার নবাবগঞ্জের ইছামতি নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের বড় গোল্লার ঘাট থেকে নয়নশ্রী ইউথ ক্লাবের মাঠ পর্যন্ত এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। নয়নশ্রী ইউথ ক্লাব, দেওতলা নবারুন সংঘ, পুরাতন বান্দুরা নবীন সেতু সংঘ ও নয়নশ্রী রাহুৎহাটি জাগরনী সংঘ এ বাইচের আয়োজন করেন।

বাইচ উপলক্ষে এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ ছিল। ইছামতির দুপাড় সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। বাইচ দেখতে ইছামতি নদীর দুপাশে হাজির হয়েছিল স্থানীয়সহ আশেপাশের উপজেলার প্রায় অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষ। ইঞ্জিনচালিত ও পানসি নৌকা নিয়ে নদীতেও ছিল মানুষের উপস্থিতি। কোনো কোনো নৌকায় উচ্চ শব্দে বাজছিল গান। বাইচে আগত দর্শনার্থীরা ঢোল, তবলা নিয়ে নেচে গেয়ে এক বর্নিল পরিবেশ সৃষ্টি করে এলাকাজুড়ে। দর্শকের টান টান উত্তেজনার মধ্যেই বাইচের নৌকার মাঝিরা হাঁক দিলেন হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো। দর্শকদের হর্ষধ্বনি আর হাততালি বাড়তি উৎসাহ জোগায় নৌকাগুলোকে।

বাইচে দেওতলার শিকদার বাড়ি, মাঝিরকান্দার খান বাড়ি, আলালপুরের মোহাম্মদ আলী মিস্ত্রী, খানেপুরের শেখ বাড়ি, কৃষ্ণনগরের দাতা নাতি মোহন মন্ডল, শ্রীনগরের আলমপুরের মামা ভাগ্নে, আগলার লিটন এক্সপেস, কাউনিয়াকান্দি কাঞ্চননগরের নীল তরী, সিরাজদিখানের তুফান ও ফরিদপুরের বাঁচারী নামে বিশালাকৃতির দশটি ঘাসি নৌকা অংশগ্রহণ করেন। জোড়ায় জোড়ায় টান দেয় নৌকাগলো।

নৌকা বাইচ ঐতিহ্য রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সংগঠনের পক্ষ থেকে দ্রুত ইছামতী নদী সচল করতে সোনাবাজু বেড়িবাঁধে প্রয়োজনীয় জলকপাট স্থাপন ও প্রতিটি জেলা উপজেলায় সরকারীভাবে নৌকা বাইচ আয়োজনের দাবি জানান। অন্যথায় নৌকা বাইচ খুব সহসাই বিলুপ্ত ঘটবে বলে মনে করেন তিনি।

কমিটির সহসভাপতি ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ বলেন, নবাবাগঞ্জে নৌকাবাইচের ঐতিহ্য প্রায় শত বছরের। কিন্তু এখন নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকা ও কচুরিপানার কারণে বাইচে ভাটা পড়েছে। আর এজন্য দায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০০১ সালে ইছামতী নদীর উৎপত্তিস্থল কাশিয়াখীতে বেড়িবাঁধ দেয়া হয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের অদক্ষতা ও অপরিপক্কতায় বাঁধের ইছামতী-পদ্মা নদীর সংযোগ স্থলে জলকপাট (স্লুইস গেট) স্থাপন না করে অন্যত্র স্লুইসগেট স্থাপন করা হয়। যে কারণে নদীটি আজ বিলুপ্তির পথে।

নৌকাবাইচ শেষে পুরস্কার বিতরণীর সভাপতিত্ব করেন নয়নশ্রী ইউথ ক্লাবের সভাপতি শিকদার মোক্তার হোসেন খৈমদ্দিন। উদ্বোধক ছিলেন সমাজ সেবক মো. কামাল হোসেন।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন দোহার সার্কেল এএসপি আরিফুর রহমান, নবাবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ। আরো উপস্থিত ছিলেন নয়নশ্রী ইউপি চেয়ারম্যান মো. পলাশ চৌধুরী, বান্দুরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ূন কবির, বাংলাদেশ নৌকাবাইচ ঐতিহ্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ, নয়নশ্রী ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম মুকুল, স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইদুল কবির সুমন সহ আরো অনেকে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category