1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
July 27, 2024, 3:16 am

নবাবগঞ্জে কৃষকের সর্বনাশ করে ইটভাটার রাস্তা!

নিজস্ব প্রতিবেদক। প্রিয় বাংলা নিউজ২৪
  • Update Time : Thursday, January 23, 2020
  • 2338 Time View

কৃষক ও দরিদ্র মানুষের সর্বনাশ করে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামে ইটভাটার জন্য রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, ‘এনবিসি’ নামে কৃষি জমিতে গড়ে তোলা ওই ইটভটার মালিক নয়নশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পলাশ চৌধুরি ও শিকারীপাড়ার ইউপি চেয়ারম্যান আলীমোর রহমান খাঁন পিয়ারা সহ কয়েকজন। গেল বছর থেকে ভাটার কার্যক্রম চলে আসছে। এবছর ভাটায় যাতায়াতের জন্য কৃষি জমি নষ্ট করে চলছে সড়ক নির্মানের কাজ। অজুহাত দেয়া হচ্ছে, নয়নশ্রী ও শিকারীপাড়া ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক হিসেবে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, শিকারীপাড়া ও নয়নশ্রী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামে ইটভাটার অবস্থান হওয়ায় রাস্তাটি নির্মাণের ক্ষেত্রে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে দুই ইউনিয়ন পরিষদের কর্তারা। অভিযোগ উঠেছে, শিকারীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আলীমোর রহমান পিয়ারার ভূমিকা নিয়ে। রাস্তাটিকে ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা হিসেবে বয়ান দিয়ে কৃষক ও দরিদ্র মানুষের জমির সর্বনাশ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে জমি হারানো ব্যক্তিরা। বাঁধা দিতে গেলে দেয়া হচ্ছে হুমকি।

সম্প্রতি ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা ও উপজেলায় থাকা ইটভাটা বন্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। একইসাথে কৃষি জমিতে ইটভাটা না করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানেননি এনবিসি’র মালিকরা। উল্টো কৃষি জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, নির্মানাধীন রাস্তা থেকে একমাত্র ইটভাটা মালিক ব্যাতীত সাধারণ মানুষের কোন উপকারেই আসবে না। অভিযোগ রয়েছে, পাশের কৃষিজমি থেকেও মাটি কাটা হচ্ছে ভাটার জন্য।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পলাশ চৌধুরী ও শিকারীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলীমুর রহমান খাঁন পেয়ারাসহ আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ইটভাটাটি গড়ে তুলেছেন। যে কারণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভাটার জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, একমাত্র ভাটার মালিকরা ছাড়া এই রাস্তার সুবিধা কেউ পাবে না। তারা অভিযোগ করেন, রাস্তার কাজে বাঁধা দিতে গেলে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে ভাটার মালিকপক্ষ। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তাঁরা জানান, ইতোমধ্যে স্থানীয়রা মৌখিকভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম সালাউদ্দিন মনজুকে জানিয়েছেন। তিনি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে স্থানীয়দের দাবি।

ইটভাটার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে নয়নশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পলাশ চৌধুরী বলেন, সবধরণের নিয়ম-কানুন মেনে সরকারি অনুমোদন নিয়েই ইটভাটাটি তৈরি করা হয়েছে। আশপাশের কোন কৃষি জমি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার বা রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। পুকুরের মাটি কেটে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও সাপ্লাই কোম্পানীর কাছ থেকে মাটি কিনে ইটভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, আমাদের মালিকপক্ষের কেউ কাউকে কোনো ধরণের হুমকি ধামকি দেয়নি। যদি কেউ অভিযোগ করে থাকেন তাহলে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এছাড়াও ইটভাটার জন্য কৃষিজমির উপর দিয়ে আলাদা কোনো রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে না। ইটভাটার পাশ দিয়ে এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নে যাতায়াতের সংযোগ রাস্তা যাচ্ছে। এব্যাপারে আপনি শিকারীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে শিকারীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলীমোর রহমান খাঁন পিয়ারার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

নয়নশ্রী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিপন মোল্লার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম সালাউদ্দিন মনজু প্রিয়বাংলা নিউজ২৪ কে বলেন, এব্যাপারে কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে আমার কাছে অভিযোগ করেননি। তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। স্থানীয়রা লিখিতভাবে অভিযোগ করলে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও আমি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখছি। যদি সরকারিভাবে তাদের কোনো অনুমোদন না থাকে তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category