1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
July 27, 2024, 12:55 am

দোহার-নবাবগঞ্জে বাড়ছে করোনা: এই অবস্থায় যা করতে হবে

রাশিম মোল্লা.
  • Update Time : Wednesday, July 14, 2021
  • 703 Time View

দেশে বাড়ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা। সেই সাথে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। গত সোমবার দেশে সর্বোচ্চ করোনা সনাক্তের তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঐ নতুন রোগী সনাক্ত হয়েছে ১৩,৭৬৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২২০ জনের। এই অবস্থাতে মঙ্গলবার করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও আগামী ১৪ই জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩শে জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। তবে ঈদের পর ২৩শে জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ই আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ ফের কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। সে সময় শিল্প কারখানাও বন্ধ থাকবে।

জন্মস্থান প্রিয় ঢাকার দোহার- নবাবগঞ্জে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনার আক্রান্ত সংখ্যা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আত্মীয় পাড়াা-প্রতিবেশীর করোনা আক্রান্তের খবর পেলাম। শুনে খুব খারাপ লাগছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে নিবেদন, করোনা থেকে নিরাপদ রাখুক প্রিয় এলাকাবাসীকে।

গত এক সপ্তাহে নবাবগঞ্জে ৫৯৮ জন এর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৫৭ জনের রিপোর্ট এসেছে। ৫৫৭ জনের নমুনায় ২৯৬ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। এক সপ্তাহ করোনা সনাক্তের হার ৫৩.১৪%। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ই জুলাই ৩৯ জনের নমুনায় ১৩ জন, ৫ জুলাই ৭০ জনের নমুনায় ৩৭ জন, ৬ জুলাই ৭২জনের নমুনায় ৩২ জন, ৭ জলাই ৬৩ জনের নমুনায় ৩০ জন, ৮ জুলাই ৬৫ জনের নমুনায় ৪১ জন, ১০ জুলাই ৭৫ জনের নমুনায় ৩০ জন, ১১ জুলাই ৯৭ জনের নমুনায় ৫৬ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সবশেষে ১২ জুলাই ১১৭ জনের নমুনা পাঠানো হয়। এরমধ্যে ৭৬টি করোনায় ৫৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সনাক্তের হার ৭৫%। ৪১ জনের রিপোর্ট এখনো আসেনি। মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সকাল পর্যন্ত উপজেলা মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০৭ জন।

পাশাপাশি দোহারে করোনা সনাক্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১২ জুলাই সকাল পর্যন্ত মোট ৬১১৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। উপজেলায় মোট সনাক্ত হয়েছে ১১৩৭ জন। মারা গেছে ১৭ জন। ১১ জুলাই ৮৬ জনের নমুনায় নতুন করে ৩৯ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় সনাক্তের হার ৪৫.৩৫%।

এই অবস্থায় নাগরিক হিসেবে আমাদেরকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা প্রতিটি গ্রামেই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত সংখ্যা। তাই যুবকদেরকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সদা তৎপর থাকতে হবে। তৎপরতা বাড়াতে গ্রাম ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা এখন সময়ের দাবি। টিমের সদস্যরা করোনা আক্রান্ত পরিবারের বাজার সদাই, ওষুধ পত্র সংগ্রহ করে দিবেন। তাদেরকে ভয় না দেখিয়ে সাহস দিবেন। মনে রাখা প্রয়োজন, আজ সে করানো আক্রান্ত হয়েছে, কাল আপনিও আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এই অবস্থায় সবাইকে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ঘনঘন সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধৌত করতে হবে। যতটা সম্ভব নাক, চোখ, মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যতটা সম্ভব ভিটামিন সি, ডি ও শাকসবজি জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। কেউ করোনা আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে মনোবল শক্ত রাখতে হবে। কেননা করোনা আক্রান্ত বহুলোক সুস্থ হয়েছে এবং হচ্ছে। জ্বর ঠান্ডার কোন রকম সন্দেহ হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। গোপন রেখে যে রেখে কোন লাভ নেই। বরং ক্ষতি। করোনা প্রাথমিক স্টেজে ধরা পড়লে চিকিৎসায় ভালো হয় এই রোগ। শেষ দিকে ধরা পড়লে তখন চিকিৎসা করেও লাভ হয় না তেমন একটা। এছাড়া, এলাকার সচ্ছল, সামর্থ্যবানদের সমন্বয়ে একটি সহায়তা ফান্ড গঠন করা অতীব জরুরী। যেখান থেকে অসচ্ছল, গরীব অসহায় পরিবারকে সহায়তা করা হবে। এলাকার স্বচ্ছল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে রাখবেন এলাকায় যদি করোনার সংক্রমণ আরো বেড়ে যায়, তাহলে আপনারা কেউ রেহাই পাবেন না। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, করোনায় সচ্ছল, ধনী, লাখোপতি, কোটিপতিরাই বেশি মারা যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ফোকাল পার্সন ডা. হরগোবিন্দ সরকার অনুপ বলেন, কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। চিকিৎসায় করানো ভালো হওয়ার রেকর্ড অনেক বেশি। করোনার আক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে ঘনঘন সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধৌত করতে হবে। ভিটামিন সি, ডি, শাকসবজি ও ফলমূল জাতীয় খাবার খেতে হবে। রোনার যে ভ্যাক্সিনটি গ্রহণ করার সুযোগ থাকবে সেটিই নিয়ে নিতে হবে। অনলাইনে টিকার নিবন্ধন করুন। প্রাপ্ত মেসেজ অনুযায়ী হাসপাতালে গিয়ে টিকা নিন। দেশের যত বেশি মানুষ দ্রুত ভ্যাক্সিন নেবে তত দ্রুত পুরো দেশ নিরাপদ হবে। ভ্যাক্সিন নেয়ার পর করোনা আক্রান্ত হলেও মৃত্যু ঝুঁকি ১% এরও কম এবং অন্যকেও সংক্রমিত করে না। মাস্ক, ভ্যাক্সিন ও স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া বিকল্প অন্য কোন উপায় নেই।

করোনা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা গড়ে তোলা এবং প্রত্যেকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম বাড়িয়ে তোলা। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে মারাত্মক লক্ষ্মণ অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ, সেগুলো সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। যে খাবারগুলো এখন বেশি করে খেতে হবে-

বিটা ক্যারোটিন: উজ্জ্বল রঙের ফল, সবজি। যেমন, গাজর, পালংশাক, আম, ডাল ইত্যাদি।

ভিটামিন এ: গাজর, পালংশাক, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, জাম্বুরা, ডিম, কলিজা, দুধজাতীয় খাবার।

ভিটামিন ই: কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, বাদাম তেল, বিচিজাতীয় ও ভেজিটেবল অয়েল, জলপাইয়ের আচার, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।

ভিটামিন সি: আমলকী, লেবু, কমলা, সবুজ মরিচ, করলা ইত্যাদি।

রাশিম মোল্লা
সাধারণ সম্পাদক
সেভ দ্য সোসাইটি এন্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category