1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
July 27, 2024, 12:44 am

গরীবের চালে পুকুরচুরি!

শামীম আরমান
  • Update Time : Friday, January 31, 2020
  • 1544 Time View

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ঢাকার দোহার উপজেলায় নয়াবাড়ি ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরে ন্যায্যমূল্যের চাল বিতরণে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পরিবেশক (ডিলার) -এর বিরুদ্ধে।

ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, উপজেলার নয়াবাড়ি ইউনিয়নের ১,২,৩,৪,৭ ও আংশিক ৮ ওয়ার্ডের অধিকাংশ সুবিধাভোগী ৩০ কেজি চালের স্থলে ২৬/২৮ কেজি চাল পেয়েছেন। তালিকায় নাম আছে কিন্তু কার্ড দেয়া হয়নি এমনও অনিয়ম রয়েছে। আবার গরীবের কার্ড ডিলার নিজের কাছে রেখে চাল উত্তোলনের ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালের ডিলার নয়াবাড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুজনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে এলাকার হতদরিদ্র মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, সম্প্রতি সরকার কর্তৃক মৃত ব্যক্তি ও ভূয়া সুবিধাভোগীদের শনাক্তকরণের জন্য স্ব-স্ব উপজেলায় চিঠি পাঠায় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। গেল সোমবার নয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম আহম্মেদ হান্নান তাঁর ইউনিয়নের ন্যায্য মূল্যের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের নিয়ে যাচাই বাছাইয়ে জন্য আগে থেকেই মাইকিং করে ইউনিয়নের মাঠে আসতে বলেন। এসময় সুবিধাভোগীদের কার্ড চিহ্নিতকরণের সময় অধিকাংশ সুবিধাভোগী চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেণ।
তারা বলেন, তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাল না পাওয়া, তালিকায় নাম না থাকা ব্যক্তির কাছে নগদে চাল বিক্রয়, বিভিন্ন সময়ে চাল না দিয়ে উল্টো তাদের কার্ড নিজের নিয়ন্ত্রনে রেখে চাল না দেওয়া সহ ঠিকভাবে কিস্তি অনুযায়ী চাল না দিয়ে তাদের অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে ডিলার সুজন। কিছু বলতে গেলে সে আওয়ামী লীগের নেতা বলে দম্ভোক্তি দেখান গরীবদের।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অরঙ্গবাদের আব্দুল মজিদের নামে কার্ড থাকা সত্ত্বেও সে একবারও চাল পাননি। একই এলাকার অতুল হালদার, স্বপন কুমার মালাকার, মো. রমজান আলীর নামে থাকা কার্ডে এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচবার চাল দেওয়া হয়েছে। অথচ তারা বিভিন্ন মেয়াদে আরও চাল পাবে।
একই অভিযোগ রয়েছে মো. রব মোল্লা, মর্জিনা বেগম, মজিবর রহমান, জয়ন্ত রানী হালদার, শেখ মোসলেম. শ্যামলাল হালদার, সুনিল হালদার ও সঞ্জিত হালদারের পরিবারের। এছাড়া গরীবের বাহিরে চাল বিক্রির অভিযোগ রয়েছে সুজনের বিরুদ্ধে।

তারা জানায়, তাদের উপর্যুক্তভাবে কখনোই চাল দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে অরঙ্গবাদের নদী ভাঙন কবলিত এলাকার অন্ধ যুবক কানাই লাল কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমিও ঠিকঠাকভাবে চাল পাইনি। অভিযোগ রয়েছে, ডিলার সুজন অনেককেই হুমকি দিচ্ছে এ বিষয়ে মুখ না খোলার জন্য।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. সুজন বলেন, আমি কোন অনিয়ম করিনি। যা করেছি সব ইউনিয়নের মেম্বারদের সঙ্গে নিয়ে করেছি।

তবে এ বিষয়ে নয়াবাড়ি ১নং ওয়ার্ড মেম্বার ইয়ার আলী বলেন, সুজন আমাদের সামনে রেখে কখনো কিছু করেনি। সে তার মত করে চাল বিতরণ করেছে।

নয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম আহমেদ হান্নান বলেন, আমি আমার ইউনিয়নের দুু’জন ডিলারকে বেশ কিছুদিন ধরে বলছি আমাকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় থাকা ব্যক্তিদের তালিকা দেয়ার জন্য। যারা মৃত ও ভুয়া আছে তাদেরটাও চেয়েছি। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যাবে। তারা আমাকে এ বিষয়ে কোন তালিকা তো দুরের কথা কোন সহযোগিতাও করছে না। তিনি বলেন, যারা সরকারের এই মহৎ কাজকে কলঙ্কিত করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

অবিযোগে প্রকাশ, ওই ইউনিয়নে সুজনের আওতায় থাকা ৫ শতাধিক কার্ডের মধ্যে এক শতাধিক কার্ডেই রয়েছে ভয়াবহ অনিয়ম। এছাড়াও অধিকাংশ কার্ডে চাল বিতরনে অনিয়ম রয়েছে।

দোহার উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কাকন রানী বসাক বলেন, এ ধরনের অনিয়ম যদি কেউ করে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যারা ভুক্তভোগী তারা যেন ভবিষ্যতে এধরনের সমস্যায় না পড়ে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা বলেন, এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা মিললে আমরা সংশ্লিষ্ট ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। কাউকে এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হবে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category