1. news@priyobanglanews24.com : PRIYOBANGLANEWS24 :
July 27, 2024, 3:20 am

‘আমি বন্দী কারাগারে’ (ভিডিও)

বিনোদন ডেস্ক। প্রিয়বাংলা নিউজ২৪
  • Update Time : Thursday, January 23, 2020
  • 1420 Time View

‘আমি বন্দী কারাগারে/ আছি গো মা বিপদে/ বাইরের আলো চোখে পড়ে না’ গানটি শুনেছেন নিশ্চয়ই? বাংলাদেশে অডিও বাজারে অন্যতম ব্যবসা সফল অ্যালবাম ‘আমি বন্দী কারাগারে’র গান। অ্যালবামের প্রযোজকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চেনা সুর থেকে এই অ্যালবামের ৬০ লাখ কপি ক্যাসেট বিক্রি হয়েছে। অ্যালবামটি পাইরেসির শিকার হয়। সব মিলিয়ে বিক্রি হয়েছে এক কোটিরও বেশি। এখনো অ্যালবামটি বিক্রি হয়। ইউটিউবে শ্রোতারা খোঁজেন।

‘আমি বন্দী কারাগারে’ শিরোনামে অ্যালবামটি বাজারে ছেড়েছিল ওই সময়ের নতুন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চেনা সুর। ‘আমি বন্দী কারাগারে’ গান ছাড়াও ওই অ্যালবামে ‘কলমে নাই কালি’, ‘সাদা দিলে কাদা লাগাই গেলিরে বন্ধুয়া’, ‘কান্দিস না রে বিন্দিয়া, কি আর হইব কান্দিয়া’, ‘আমার সোনা বন্ধুরে, তুমি কোথায় রইলারে’, ‘আমি কেমন কইরা’সহ ১১টি গান ছিল। সব কটি গানই সাড়া ফেলেছিল। এটি ছিল সংগীতশিল্পী মুজিব পরদেশীর প্রথম অ্যালবাম। সম্প্রতি এই অ্যালবাম আর মুজিব পরদেশীকে আবিষ্কারের গল্প শোনালেন চেনা সুরের স্বত্বাধিকারী হাসান মতিউর রহমান। তিনি এই অ্যালবামে ‘আমি বন্দী কারাগারে’, ‘কলমে নাই কালি’সহ কয়েকটি গান লিখেছেন। হাসান মতিউর রহমানের বাড়ি ঢাকার দোহার উপজেলার নয়াবাড়ি ইউনিয়নে।

হাসান মতিউর রহমান বলেন, ‘তখন আমার চেনা সুর নতুন যাত্রা করেছে। তেমন কোনো অ্যালবাম নেই। ভারতের পঙ্কজ উদাসের গানের অ্যালবাম এখানে বেশ জনপ্রিয়। পঙ্কজ উদাস হিন্দি বাণিজ্যিক গজল গাইতেন। অন্য রকম ব্যাপার ছিল তাঁর পরিবেশনায়। বাংলা গজলের অ্যালবাম তৈরির উদ্যোগ নিই। গানও চূড়ান্ত। কিন্তু মনের মতো শিল্পী পাচ্ছিলাম না। ভালো হারমোনিয়াম বাজাতে পারে এবং গাইতে পারে, এমন শিল্পীর দরকার। একসময় মুজিব পরদেশীর কথা মনে পড়ে। খিলগাঁওয়ে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে প্রথম তাঁর গান শুনেছি। ঠিকানা জানা ছিল না। পরে জানতে পারি ওয়াইজ ঘাটে তাঁর বাবার দোকান। আমি নিজেই যাই সেখানে। তাঁকে জানাই, আমি তাঁর ক্যাসেট করব।’

মুজিব পরদেশীর গানের কাজ শুরু হয় ১৯৮৬ সালের ডিসেম্বরে। ঠিক হয়, গাওয়ার স্টাইল হবে পঙ্কজ উদাসের মতো। একজন হারমোনিয়াম বাজাবে আর মুজিব পরদেশী গাইবেন। গানের সঙ্গে দোতারা, বাঁশি, সেতার কিছুই বাজবে না। কিন্তু মুজিব পরদেশী প্রযোজককে বলেন, ‘জীবনে প্রথম একটা ক্যাসেট করব। দরকার হলে আমি আপনাকে পাঁচ হাজার টাকা দিচ্ছি, সব বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গানগুলো করেন।’ রাজি হননি হাসান মতিউর রহমান। মুজিব পরদেশি নিজেকে তৈরি করার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেন। গান রেকর্ডিংয়ের জন্য তৈরি। হাসান মতিউর রহমান জানান, ১৯৮৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম রেকর্ডিং হয়। মুজিব পরদেশী গান গাওয়ার পাশাপাশি নিজেই হারমোনিয়াম বাজিয়েছেন। শাঁখারীবাজার থেকে ৭০ টাকা দিয়ে জুড়ি হারমোনিয়াম ভাড়া করা হয়। কম দামি হারমোনিয়াম, কিন্তু শব্দ দারুণ। হাসান মতিউর রহমান বললেন, ‘একেবারে বাঘের মতো আওয়াজ!’ হারমোনিয়ামের সঙ্গে ছিল মন্দিরা আর তবলা।

তেজকুনীপাড়ার ঝংকার রেকর্ডিং স্টুডিওতে পৌনে দুই ঘণ্টার মধ্যে ১১টা গান রেকর্ড হয়। রেকর্ডিং শেষে একটা ডামি ক্যাসেট পকেটে নিয়ে হাতিরপুলে গীতিকবি সংসদে যান হাসান মতিউর রহমান। সেখানে সেই ডামি ক্যাসেট বাজানো হয়। শুনে সবাই অবাক, এত সুন্দর কণ্ঠ! ঠিক হলো, প্রচ্ছদ করে বাজারে ছাড়া হবে। পরদিন মুজিব পরদেশী নিজের মানিব্যাগে থাকা পাসপোর্ট সাইজের একটা ছবি দেন। শাঁখারি বাজারে তৈরি হলো প্রচ্ছদ। শুরুতে পরীক্ষামূলকভাবে একটা দোকানে ২০ কপি ক্যাসেট দেওয়া হয়। প্রথম দিন থেকে সুপারহিট এই অ্যালবাম।
হাসান মতিউর রহমান জানান, ‘আমি বন্দী কারাগারে’ অ্যালবামের জন্য খরচ হয়েছে মোট ১ হাজার ৩৬০ টাকা। তৈরি হলো বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত অ্যালবাম।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category