ঢাকার নবাবগঞ্জের তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেনের পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে তার চাচাদের বিরুদ্ধে। প্রতিপক্ষের অত্যাচারের দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ছাড়া অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন। এছাড়া নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে এবং কোর্টে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই লীজকৃত জমিতে দোকান নির্মাণ করছেন আকবর আলী গংরা।
জানা যায়, উপজেলার শিকারীপাড়া মৌজার আর,এস ৪৪৫নং খতিয়ানের এস,এ ৭৭৭ ও ৭১৭নং এবং আর,এস ১০১৩ ও ৯২৩ দাগের ৮ শতাংশ সম্পত্তি আমজাদ হোসেনের বাবা মো. ইছাব আলী ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে নামজারী করে ভোগ দখলের ছিলেন। তিনি আমজাদ হোসেনসহ তিন ছেলে, পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রীকে ওয়ারিশ রেখে মারা যান। পরবর্তীতে আমজাদ হোসেন পৈত্রিক সূত্রে ১.২৭ শতাংশ এবং মা ও তিন বোনের কাছ থেকে আরো ২.৯২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সবমিলিয়ে আর,এস ১০১৩ ও ৯২৩ দাগের তিনি পৈত্রিক ও খরিদা সূত্রে ৪.১৯ শতাংশ জমির মালিক হলেও বড় ভাই ও চাচাদের অত্যাচারে বাসায় বসবাস করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনিু।
আমজাদ হোসেন আরো অভিযোগ করে বলেন, তার আত্মীয়রা তাকে বাড়ি থেকে বিতারিত করেই ক্ষান্ত হননি। তার লীজের সম্পত্তির দখল করে নিজেদের নামে লীজ এনে এখন সেখানে দোকান উঠানোর পায়তারা করছেন। তার অনুপস্থিতিতে ঘরে তালা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আমজাদ হোসেন বলেন, শিকারীপাড়া এসএ ১৬১নং খতিয়ানে এস,এ ৭১৭ দাগে ০.৫০ শতাংশ এবং ৭৭৭ দাগে ৭ শতাংশ মোট সাড়ে ৭ শতাংশ তিনি সরকারের কাছ থেকে লীজ নিয়েছিলেন (ভিপি কেস নম্বর-১৮৭/৭৫)। সম্পত্তি তার দখলের ছিল এবং তিনি বাংলা ১৪৩০ সালের খাজনা পরিশোধসহ সকল নিয়ম যথাযথভাবে পালন করেছেন। ১৪৩১ সালের খাজনা দিতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার নামে লীজকৃত ঐ সাড়ে ৭ শতাংশ জমি তার চাচা আশরাফ আলী, মো. আকবর আলী, মোহাম্মদ এমারত হোসেন ও ইউসুফ আলীর নামে নতুন করে লীজ দেওয়া হয়েছে (ভিপি কেস নং- ১৮৭/৭৫)। অথচ তার লিজ কেন বাতিল করা হলো এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে কোন নোটিশ দেওয়া হয়নি। এতে হতবাক হয়ে যান তিনি। লীজ ফিরে পেতে কোর্টের দারস্থ হন আমজাদ হোসেন। হাইকোর্ট থেকে লীজকৃত সম্পত্তির ব্যাপারে নোটিশও জারি করা হয়। তবে সব আদেশ অমান্য করে লীজকৃত ৭১৭ দাগের আধা শতাংশসহ ঐদাগে আমজাদ হোসেনের ব্যক্তিগত সম্পত্তি দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন আকবর আলী গংরা।
জানা যায়, লীজ দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়ম করেছে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস। কোন যাচাই বাছাই ছাড়াই মৃত ব্যক্তির নামেও লীজ দেওয়া হয়েছে। খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই আগে মারা যান আশরাফ আলী। কিন্ত উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ১৫/৭/২০২৪ সালে তিনিসহ আরো ৪জনের নামে সাড়ে ৭শতাংশ জমি লীজ দেওয়া হয়েছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আকবর আলী বলেন, আমজাদ একাই পুরো সম্পত্তি নিজের নামে লিজ নিয়েছিল তাই আমরা ঐটা বাতিল করে নিজেদের নামে লিজ এনেছি। তার সম্পত্তি দখল করেনি। আর মৃত ব্যক্তির নামেই লিজ আনা হয়নি। লিজ আনার পর তিনি মারা গেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মামুন বলেন, আমার জানা মতে আশরাফ আলী আরো দুই বছর আগে মারা গেছে।
এব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসিফ রহমান বলেন, মৃত ব্যক্তির নামে লিজ নেওয়ার সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন