ঢাকার নবাবগঞ্জে আপন ছোট ভাইয়ের জমি বায়না করেছে বিপাকে পড়েছেন বড় দুই ভাই। টাকা নিয়েও ছোট ভাই মো. ফারুক জমি রেজিষ্ট্রি না করে উল্টো মামলা করে হয়রানি করছেন বড় ভাই নূর ইসলাম, মো. ফুরহাদ ও ভাতিজা আল আমিনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার গালিমপুর ইউনিয়নের বড়গ্রাম মধ্যপাড়া এলাকায়।
জানা যায়, ফারুক তার বসতবাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলে তা কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন তারই আপন ভাই নুর ইসলাম, ফুরহাদ ও ভাতিজা আল আমিন। উভয়পক্ষ বসে ৯ শতাংশ জমির দাম নির্ধারণ করেন ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। স্ট্যাম্পে লিখিত বায়না হলে ভাইদের ও ভাতিজার কাছ থেক দুই ধাপে ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা নেন ফারুক। টাকা নেওয়ার পরই জমি রেজিষ্ট্রি করতে টালবাহানা শুরু করেন ফারুক। ভাতিজাকে মারধরের পাশাপাশি আদালতে মামলাও করেন তাদের বিরুদ্ধে।
নুর ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের ৩১ তারিখে জমি ক্রয়ের বায়নানামা একটি ষ্ট্যাম্প করা হয়। সেখানে প্রথমে ৬ লাখ টাকা পরিশোধের পর ৫ মাসের সময় চাওয়া হয়। পাঁচমাস পর রেজিস্ট্রি করতে গেলে আমার চাচা ফারুকের আইডি কার্ডে নামে ভুল থাকায় রেজিস্ট্রি আর হয়নি। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য এক মাসের সময় নেয়। এরপর তাকে আরো ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্ত আজও আমাদের জমিটি রেজিস্ট্রি করে দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, জমি যখনই রেজিস্ট্রি করার কথা বলি তখনই আমার চাচা ফারুক বাড়ি থেকে আত্মগোপনে চলে যায়। গত কয়েকদিন আগে বাড়ির সবকিছু নিয়ে চলে গেছে। যাওয়ার পর আমাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। আমরা এখন টাকা চাইলে বা জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা বললে তিনি কোন কিছুতেই রাজি নয়, বরং উল্টো আমাদের হয়রানি করছেন।
রফিকুল আরও বলেন, দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে তাই চাচা ফারুকের বিরুদ্ধে আদালতে আমরা প্রতারণার মামলা দায়ের করেছি। আশাকরি দ্রুতই ফলাফল পাবো।
ফারুকের সেজো ভাই রুহুল আমীন বলেন, আজ দিব কাল দিব এরকমভাবে আমার ছোট ভাই ফারুক বাড়ির সবাইকে ঘুরিয়েছে। জমি ক্রয়ের বায়নার সময় টাকা নেওয়ার পর আমার জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। এখন সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ফারুকের ভাতিজী উর্মি ও ছনিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে আমার চাচাতো ভাই রফিকুলকে মারধর করেছে আমার চাচা ফারুক, তার স্ত্রী ও মেয়ে। ফারুক কাকা দা দিয়ে কোপ দিয়ে উল্টো তারা থানায় গিয়ে রফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় সমাজপতি আব্দুল কাদের, আব্দুল লতিফ ও কামরুজ্জামান বলেন, ফারুক সমাজের সবাইকে অপমান করেছে। জমি রেজিস্ট্রি করে দিবে বলে আমাদের একাধিকবার তারিখ সময় নিয়েছে কিন্ত আজও দেয়নি। বরং টাকা নিয়ে পালিয়ে আছে এবং উল্টো নুর ইসলাম ও তার ছেলেদেরকে হয়রানি করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফারুকের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিবার সংযোগ দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন