ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে বেশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাস যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর-গোল্লা-ময়মন্দি গ্রামবাসীর আয়োজনে মহোৎসবে একসাথে আহার করলেন ১২ হাজারের অধিক ভক্ত পূণ্যার্থী।
শুক্রবার শ্রী শ্রী সার্বজনীন রক্ষাকালী পূজা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গনে কীর্তন মহাপ্রভুর ভোগরাগ (মহোৎসব) অনুষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ১২ সহস্রাধিক ভক্ত পূণ্যার্থী প্রসাদ (মধ্যান্নভোজ) গ্রহণ করেন।
আহার তৈরি করতে ৪৮ ঘন্টা আগে থেকে ২০জন রাধুনীসহ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী রান্নার প্রস্তুতি করেন। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী খাবার পরিবেশন করেন। রাত পর্যন্ত চলে খাবার পরিবেশন।
মন্দির কমিটির সভাপতি তপন কুমার হালদার বলেন, ‘ ২০০ বছর ধরেই এই কালী পূজা উপলক্ষে নবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্তরা আসে। দুপুরে এক সঙ্গে প্রায় ১২ হাজার মানুষের জন্য খাবারে আয়োজন করা হয়। এটি মিলন মেলায় পরিণত হয়। আমরাও চাই মন্দিরের এই ঐতিহ্যের ধরা বজায় রাখতে।’
গোবিন্দপুর গ্রামের শশাঙ্ক ভূষন পাল চৌধুরী বলেন, ‘ ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালী পূজা উপলক্ষে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সবাই একসাথে আহার করেন। এলাকাবাসী হিসেবে এটি আমাদের গর্বের বিষয়। আগামীতেও এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখারও দাবি জানান তিনি।’
বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভক্তরা বলেন, ‘প্রতি বছরই কালী উপলক্ষ্যে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে সকালেই এখানে আসি। তারপর কীর্ত্তণে অংশ নিয়ে থাকি। অনেক মানুষের সাথে দেখা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণ মিলন মেলায় পরিণত হয়। দুপুরের খাবার খেয়ে তারপর বাড়ি ফিরি। সব মিলিয়ে এই উৎসবকে ঘিরে বাড়তি আনন্দের সৃষ্টি করে।’
এর আগে বিকাল ৩টায় পূজা উপলক্ষে আয়োজিত সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান।
মন্দির কমিটির সভাপতি তপন কুমার হালদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌম ভূলুণ্ঠিত হবে।বিএনপি-জামায়াতসহ দোসররা দেশটাকে বিদেশীদের হাতে তুলে দেবে। দেশের উন্নয়নও থেমে যাবে, সুতরাং উন্নয়ন চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনার বিকল্প নেই।
বক্তব্য রাখেন যন্ত্রাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম মনিরুজ্জামান তুহিন, ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী মোহাম্মদ রমজান, জেলা দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শশাঙ্কভূষন পাল চৌধুরী, সমাজকর্মী স্বপন কুমার হালদার ।
উপস্থিত ছিলেন মন্দির কমিটির সদস্য চন্দ্র শেখর পাল চৌধুরী (এফসিএ) এর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ মানবেন্দ্র দত্ত, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বিষ্ণুপদ সাহা, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সরকার প্রমুখ।
মন্তব্য করুন